
কক্সবাজারের টেকনাফ সেন্টমার্টিনে পরিচয় গোপন করে বাংলাদেশি জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সংগ্রহ এবং পরিবেশ অধিদপ্তরের আউটসোর্সিং কর্মী হিসেবে চাকরির অভিযোগ উঠেছে রোহিঙ্গা যুবক আব্দুল আজিজের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় তদন্তে নেমেছে উপজেলা প্রশাসন ও নির্বাচন কার্যালয়।
গত ৮ অক্টোবর সমকালে ‘রোহিঙ্গা যুবক এনআইডি বানিয়ে ‘বাালাদেশি’, কাজ করছেন সরকারি অধিদপ্তরে’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের পর প্রশাসন নড়েচড়ে বসে এবং তদন্ত কার্যক্রম শুরু হয়।
এ বিষয়ে টেকনাফ উপজেলা নির্বাচন অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) আসিফ মাহমুদ মিনহাজ বলেন, ‘সেন্টমার্টিনে পরিবেশ ও বীচ কর্মী হিসেবে কাজ করা আব্দুল আজিজ ভুল তথ্য এবং জাল কাগজপত্র দিয়ে এনআইডি করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এটি ইতিমধ্যে তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার এনআইডি বাতিলের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, আব্দুল আজিজ বর্তমানে সেন্টমার্টিন বিচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির কর্মী। পাশাপাশি জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের আওতাধীন মেরিন পার্কের আউটসোর্সিং কর্মী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন।
সেন্টমার্টিন ইউনিয়নের একাধিক বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আজিজ মিয়ানমারের নাগরিক মো. আব্দুলের ছেলে। ১৯৯২ সালে আব্দুল ও তার স্ত্রী মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেন। ২০০০ সালে আব্দুল মারা গেলে তার ছয় বছর বয়সী ছেলে আজিজকে নিয়ে মা স্থানীয় বাসিন্দা আলী আহমদের সঙ্গে বিয়ে করেন। ২০১৭ সালে আজিজ আলী আহমদকে বাবা এবং নুর নাহারকে মা দেখিয়ে জন্মনিবন্ধন তৈরি করেন একই বছর এনআইডি সংগ্রহ করেন। এনআইডিতে তার জন্মতারিখ উল্লেখ রয়েছে ১৯৯২ সালের ১ জানুয়ারি, যে বছর তার বাবা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছিলেন। এছাড়া দ্বীপে রাস্তা নির্মাণ কাজে স্থানীয় ঠিকাদারদের কাছ থেকে ‘চাঁদা’ নেওয়ার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আজিজ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, ‘সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন চেয়ারম্যানকে আব্দুল আজিজের বিষয়ে তদন্ত পূর্বক প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। প্রতিবেদন হাতে পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
সেন্টমার্টিন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ফয়েজুল ইসলাম বলেন, ‘ইউএনও স্যার বিষয়টি দ্রুত তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে বলেছেন। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, আজিজ রোহিঙ্গা বংশোদ্ভূত। পূর্ণাঙ্গভাবে যাচাই করে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।’

পাঠকের মতামত